ঈদুল আজহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে রাজধানীমুখী মানুষের ঢল নামায় যমুনা সেতু ও পশ্চিমাঞ্চলের মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল-বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম টোলপ্লাজা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থেমে থেমে চলছে যানবাহন।
এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকামুখী সাধারণ যাত্রী ও গার্মেন্টস শ্রমিকরা। ঈদের ছুটি শেষে রবিবার থেকে আবার খুলে যাচ্ছে সরকারি-বেসরকারি অফিস, তাই শনিবার সকাল থেকেই শুরু হয় রাজধানীতে ফেরার চাপ।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ঝাউল ওভারব্রিজ থেকে শুরু করে যমুনা সেতু পশ্চিম টোলপ্লাজা পর্যন্ত প্রায় এক যুগ্ম কিলোমিটার জুড়ে চলছে গাড়ির দীর্ঘ সারি। ধীরগতির কারণে যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে পড়ছেন রাস্তায়। বাস-ট্রাকের পাশাপাশি প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ।
সয়দাবাদ ইউনিয়নের কাঁঠালতলা এলাকা থেকে পরিবারসহ ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করা গার্মেন্টকর্মী আজিজ সরকার বলেন, “ছুটি শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাই সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু সেতুতে এসে দেখি- গাড়ি চলছে একেবারে থেমে থেমে।”
যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, “ঈদের শেষ দিনে গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি ট্রাফিক স্বাভাবিক রাখতে। দুপুরের পর থেকে ধীরে ধীরে চাপ কমবে বলে আশা করছি।”
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুর রউফ জানান, যানজট প্রধানত সেতুর পশ্চিমাংশে। টোল আদায় ধীরগতিতে হওয়ায় গাড়িগুলো আটকে যাচ্ছে। তবে সড়কের গোলচত্বর এলাকায় তেমন সমস্যা নেই।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু দিয়ে পারাপার হয়েছে ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন। এর মধ্যে ঢাকামুখী যানবাহন ছিল ৩০ হাজার ৮১৭টি। এই সময়ে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা।
সড়কে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, যানজট কমাতে তারা অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছেন এবং টোল আদায় দ্রুত করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে এত বিপুলসংখ্যক গাড়ির একসঙ্গে চলাচল নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগছে।
ঢাকামুখী মানুষের চাপ শনিবার রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেতু কর্তৃপক্ষ, ট্রাফিক বিভাগ ও স্থানীয় পুলিশ একযোগে কাজ করছে।
এফপি/রাজ