জয়পুরহাটে ছোট যমুনা নদীর পাড়ের ফাটল দিয়ে আসা জোয়ারের পানি নিয়ে এলাকায় কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনাকে অলৌকিক ভেবে রোগ নিরাময়ের আশায় সেখান থেকে পানি সংগ্রহ ও পান করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে অপরিশুদ্ধ ওই পানি পানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
সদর উপজেলার কুঠিবাড়ি পুরোনো সেতুর দক্ষিণ পাশের একটি পিলারের নিচে ফাটল দিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই পানি বের হচ্ছে। খবর পেয়ে প্রতিদিনই সেখানে ভিড় করছেন লোকজন। আশপাশের এলাকা থেকে ছুটে আসছেন অনেকেই। তবে পানির উৎস সম্পর্কে কেউ সঠিক তথ্য জানাতে পারেননি।
ছোট যমুনা নদীর কুঠিবাড়ি এলাকায় পাশাপাশি দুটি সেতু আছে। নতুনটি চালু হওয়ার পর পুরোনো সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, পুরোনো সেতুর দক্ষিণ পাশের পিলারের কাছে একটি ছোট ফাটল দিয়ে পানি বের হচ্ছে। এর মুখে বসানো হয়েছে আড়াই হাত লম্বা একটি ডোঙা (গোলাকার টিনের পাত), যার ভেতর দিয়ে পানি নদীতে পড়ছে। আর সেখানে বেশ কয়েকজন শিশু-কিশোর ও নারী বোতল হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা ডোঙার মুখে বোতল ধরে পানি সংগ্রহ করছেন। ডোঙা দিয়ে কখনো স্বচ্ছ, আবার কখনো বালু বা ময়লাযুক্ত পানি নদীতে পড়ছে। তবে সুড়ঙ্গের পেছনে নদীর বাঁধ এবং আশপাশের জায়গা শুকনো আছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, তারা এক সপ্তাহ আগে সেখানে পানি আসতে দেখেন। পরে এক তরুণ সুড়ঙ্গের মুখে ডোঙা লাগিয়ে দেন। এতে পানি সরাসরি নদীতে পড়ছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় নারী-পুরুষেরা সেখানে আসেন। তারা অলৌকিক পানি ভেবে তা বোতলে ভরে নিয়ে যান।
বুধবার সেখানে পানি সংগ্রহ করতে এসেছিলেন পারুল বেগম নামের এক গৃহবধূ। তিনি বলেন, অনেকেই এই অলৌকিক পানি পান করে সুস্থ হয়েছেন বলে শুনতে পেয়েছেন। তার ছোট মেয়ে অসুস্থ। তাই পানি নিতে এসেছেন। আপাতত তিনি দুই বোতল পানি নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন।
বিষয়টি নিয়ে কুঠিবাড়ি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, এটি অলৌকিক কিছু নয়। পাড়ের মাটিতে বালু আছে। বালু থেকে জোয়ারের পানি পড়ছে বলে আমার ধারণা। রোগ নিরাময়ে লোকজন এসে বোতলে এই পানি ভরে পান করছেন। তবে কারও রোগ নিরাময়ের হয়েছে বলে এখনো শুনিনি। তারপরও প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এসে পানি নিয়ে যাচ্ছেন।
জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সরদার রাশেদ মোবারক বলেন, এই পানি অপরিশুদ্ধ। কেউ পানি পান করলে পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া-কলেরা-টাইফয়েড ও জন্ডিসে আক্রান্ত হতে পারেন। তিনি ঘটনাটি থানা-পুলিশকে জানাবেন।
এফপি/রাজ