জাতীয় ঐকমত্যের প্রতীক হিসেবে ঘোষিত ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে দেশে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, সনদে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়- নব্বইয়ের গণআন্দোলনের উল্লেখ না থাকায় এর পূর্ণতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠন সনদের এই ঘাটতি নিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে। তারা বলছেন, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলন বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মূল ভিত্তি, অথচ সেটি উপেক্ষিত রয়ে গেছে জুলাই সনদে।
‘অপরাজেয় ৯০’ নামের একটি সংগঠন ইতিমধ্যে সনদে নব্বইয়ের গণআন্দোলনের অধ্যায় সংযোজনের দাবি জানিয়েছে। তারা বলছে, “নব্বইয়ের গণআন্দোলন শুধু একটি রাজনৈতিক ঘটনা নয়, এটি জাতির গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতীক। এই আন্দোলনকে বাদ দিয়ে কোনো জাতীয় ঐকমত্যের দলিল পূর্ণ হতে পারে না।”
বিএনপি ও কয়েকটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলও একই অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, “সনদ প্রণয়নের সময় ৩৩টি দলের মতামত নেওয়া হলেও, প্রধান কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে এটি সত্যিকারের জাতীয় ঐকমত্য নয়।”
অন্যদিকে সরকারপক্ষ বলছে, জুলাই সনদ দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা দিতে তৈরি করা হয়েছে। ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায় সেখানে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব নয়, তবে পরবর্তী সংস্করণে প্রাসঙ্গিক অধ্যায়গুলো যোগ করা যেতে পারে।
আগামী ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে জুলাই সনদে আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, “এই সনদ দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এক নতুন অধ্যায় সূচনা করবে।”
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নব্বইয়ের গণআন্দোলনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা উপেক্ষিত থাকলে জাতীয় ঐকমত্যের এই প্রচেষ্টা নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।
এফপি/রাজ