চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, সিন্ডিকেট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) লং মার্চ শেষে শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে পঞ্চগড়ের শেরে বাংলা পার্ক মোড়ে সমাপনী পথসভায় বিদ্যুৎবিভ্রাট দেখা দেওয়ায় নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে সারজিস আলম বলেন, একবার নয় দুই বার নয়, এবার নিয়ে তিনবার এনসিপির অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। সারজিস আলম নেসকো কর্তৃপক্ষকে উদ্দেশ করে বলেন, নেসকোর যে মালিক তাকে এবং তার বাপকে জবাব দিতে হবে এনসিপির প্রোগ্রামের সময় এটা হয় কেন? যারা এই কাজ করেছে মূলত রাজনৈতিক দেউলিয়াদেরকে আমরা দেখে নেব। তাদের কলিজা কতো বড় হইছে। কলিজা ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে রাখব। এরপর দেখব পঞ্চগড়ের নেসকোর দায়িত্বে কে আছে।
সারজিস আলম নেসকো কর্মকর্তাদের ‘রাজনৈতিক দেউলিয়া’, ‘রাজনৈতিক চাটুকার’ ও ‘তোষামোদকারী পা চাটা’ বলে আখ্যায়িত করেন এবং হুঁশিয়ারি দেন, এরপর থেকে যদি কোনো প্রতিষ্ঠান পঞ্চগড়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণ করে, ওই প্রতিষ্ঠান এই পঞ্চগড়ে থাকবে না। এটা আমার নিজের কমিটমেন্ট।
এ সময় সেনাবাহিনীর প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, সেনাবাহিনীর যেসব কর্মকর্তা ও জেনারেল শেখ হাসিনার আমলে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও ‘আয়না ঘরের’ নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা জরুরি। তিনি আশা করেন, সেনাবাহিনী নিজ দায়িত্বে এই বিচারিক প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করবে, অন্যথায় এই গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি কলুষিত হবে।
জুলাই সনদ প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, এক-দুদিন দেরি হওয়া বড় বিষয় নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো এর বাস্তবায়ন। জনগণের দেওয়া এই সনদ বাস্তবায়নের আইনগত ভিত্তি থাকতে হবে এবং ঐকমত্য কমিশনকে এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে, না হলে এটা ছাত্র-জনতার সঙ্গে বড় বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হবে।
এর আগে, শনিবার দুপুরে পঞ্চগড় পৌরসভার সুগার মিল এলাকা থেকে শত শত মোটরসাইকেল নিয়ে এই লং মার্চ শুরু হয়। সারজিস আলম একটি পিকআপ ভ্যানে চড়ে অংশ নেন এবং দুর্নীতিবিরোধী নানা স্লোগান দেন। লং মার্চটি পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী, চাকলাহাট, হাড়িভাসা, হাফিজাবাদ, অমরখানা, সাতমেরা ও তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর, ভজনপুর, বুড়াবুড়ি, শালবাহান, তেঁতুলিয়া ও তিরনইহাট ইউনিয়ন অতিক্রম করে বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের সিপাইপাড়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়।
এফপি/এমআই