| শিরোনাম: |

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা পালিত হবে। এ উপলক্ষে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার, মন্দির ও আশ্রমে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নগরজুড়ে চলছে আলোকসজ্জা, ফানুস প্রস্তুতি এবং ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা।
বৌদ্ধ ধর্মীয় মতে, প্রবারণা পূর্ণিমা গৌতম বুদ্ধের বর্ষাবাস সমাপ্তির স্মৃতি বহন করে। এদিন ভিক্ষুরা পরস্পরের কাছে ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে আত্মশুদ্ধির অঙ্গীকার করেন। বর্ষাবাস শেষে এই দিনটি আত্মসংযম, শান্তি ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, “প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। দিনটি শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বিহার ও মন্দিরে বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্যসেবা, অগ্নি-নিরাপত্তা এবং স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ফানুস উড়ানোর সময় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ টিম কাজ করবে। আমরা চাই, সবাই আনন্দ, নিরাপত্তা ও সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে উৎসবটি উদযাপন করুন।”
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, “প্রবারণা উৎসব উপলক্ষে নগরজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিহার ও মন্দির এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন, সিসিটিভি নজরদারি, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। রাতে ফানুস উড়ানোর সময় ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের যৌথ টিম মাঠে থাকবে, যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি।”
প্রবারণাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার, সাতকানিয়া, পটিয়া, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, রাউজান, লোহাগাড়া, বাশখালী, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিহারগুলোতে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। প্রতিটি মন্দিরে ঝলমলে আলোকসজ্জা, ফুলের তোড়া, দানবাক্স সাজানো এবং মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলনের আয়োজন চলছে।
চট্টগ্রাম নন্দনকানন বিহারের আবাসিক দিপানন্দ স্থবির বলেন, “প্রবারণা পূর্ণিমা আমাদের আত্মশুদ্ধি ও মানবকল্যাণের শিক্ষা দেয়। এই দিনে সবাই পরস্পরের প্রতি ক্ষমাশীলতা ও সহানুভূতির চর্চা করে। চট্টগ্রামের সব বৌদ্ধ ভক্ত এখন উৎসবের আনন্দে মেতে উঠেছেন। আমরা আশা করি, শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে প্রবারণা সকলের জীবনে কল্যাণ বয়ে আনবে।”
বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা রনজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, “প্রবারণা পূর্ণিমা শুধু ধর্মীয় নয়, এটি মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধের উৎসব। বুদ্ধের শিক্ষা আমাদের শেখায়—সহানুভূতি, করুণা ও অহিংসার মাধ্যমে মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য গড়ে তুলতে হবে। আজকের দিনে সেই শিক্ষা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। আমরা চাই, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এই উৎসবে আনন্দ ভাগ করে নিক।”
চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদ, নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহার মোড়, কাতালগঞ্জ ও পটিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাটে ইতোমধ্যে রঙিন আলোকসজ্জা ঝুলানো হয়েছে। স্থানীয় তরুণরা ব্যস্ত ফানুস ও লণ্ঠন সাজাতে।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রবারণা পূর্ণিমা মানুষকে আত্মসংযম, ধৈর্য, ক্ষমাশীলতা ও পরম করুণার পথে আহ্বান জানায়। চট্টগ্রামের বৌদ্ধ সম্প্রদায় আশা করছে—এই উৎসবের মাধ্যমে সমাজে শান্তি, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির চেতনা আরও সুদৃঢ় হবে।
আগামীকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের আকাশে উড়বে হাজারো রঙিন ফানুস। বিহার ও মন্দিরজুড়ে প্রার্থনা, পূজাঅর্চনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখর থাকবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় এবারের প্রবারণা পূর্ণিমা শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপনের প্রত্যাশা সবার।
এফপি/অআ
দেশের পুষ্টি ও অর্থনীতিতে গ্রামীণ নারীদের অবদান অপরিসীম: ফরিদা আখতার
আনসার-ভিডিপি জনগণের নিকটতম প্রতিরক্ষা স্তর হিসেবে কাজ করছে: মহাপরিচালক
খাগড়াছড়িতে আনসার সদস্যদের দ্রুত তৎপরতায় এড়ানো গেল বড় দুর্ঘটনা
ডাঃ সেরাজুল হকের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
গণভোট নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল