গাজীপুরের টঙ্গীর সাহারা মার্কেট এলাকায় একটি কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের চার সদস্যের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে টিনশেড কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগলে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণের ফলে ফায়ার সার্ভিসের চার সদস্য দগ্ধ হন। দগ্ধদের মধ্যে ফায়ারফাইটার শামীম আহমেদ (৪২), মো. নূরুল হুদা (৪০) এবং ফায়ার অফিসার খন্দকার জান্নাতুল নাঈম (৩৫) গুরুতর দগ্ধ হন। শামীম ও নূরুল হুদা ১০০% দগ্ধ হয়েছেন, জান্নাতুল নাঈম ৪২% এবং ফায়ারফাইটার মো. জয় হাসান (২৪) ৫% দগ্ধ হয়েছেন।
ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন এবং দগ্ধ ফায়ারকর্মীদের সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “আহতদের চিকিৎসায় কোনও ধরনের অবহেলা বা গাফিলতি করা যাবে না। আহতদের সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল। এখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই ভালো। এখানকার ডাক্তাররাসহ সংশ্লিষ্টরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।”
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন জানান, দগ্ধদের চিকিৎসায় একটি মনিটরিং টিম সব সময় কাজ করবে। তিনি বলেন, “রোগীদের সুচিকিৎসায় আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করার দরকার, তার সবই করা হবে।”
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুনের সূত্র এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, কেমিক্যালের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের ফলে ফায়ারকর্মীরা গুরুতর দগ্ধ হন।
ঘটনার পর সাতটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয়রা প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন, পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে দগ্ধদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিয়েছেন।
এই দুর্ঘটনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যদের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের উদাহরণ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এফপি/রাজ