প্রথমে কবিরাজ হিসেবে পরিচয় তারপর তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া সুযোগ নিয়ে ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও তার মাকে হত্যা করেন ঘাতক মোবারক। পালিয়ে যাবার সময় রেলস্টেশন থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত মোঃ মোবারক হোসেন-কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সুমাইয়া আফরিন রিনথিকে কথিত জ্বীনে ধরায় ভিকটিম তাহমিনা বেগম ফাতেমা তার মেয়েকে বাবুস সালাম জমিরিয়া মাদরাসা এব ইলিয়াস হুজুরের কাছে ঝাড়-ফুক করার জন্য যেতেন। সেখানে আসামি মোঃ মোবারক হোসেন এর সাথে পরিচয় হলে ভিকটিম তাহমিনা বেগম ফাতেমা আসামিকে তার বাসায় মেয়েকে এসে ঝাড়-ফুক দিতে বলেন। আসামি মোঃ মোবারক হোসেন কয়েকবার ভিকটিমের বাসায় গিয়ে ভিকটিম সুমাইয়া আফরিন রিনথি-কে ঝাড়-ফুক করে আসে। আনুমানিক এক মাস যাবত আসামি ভিকটিমের বাসায় আসা-যাওয়া করত।
ঘটনার দিন সকাল ০৮:৩০ ঘটিকায় আসামি মোঃ মোবারক হোসেন একটি কমলা রংয়ের শপিং ব্যাগ ও একটি কালো রংয়ের ব্যাগ নিয়ে ভিকটিমের বাসায় প্রবেশ করে। অতঃপর ভিকটিম সুমাইয়া আফরিন রিনথিকে ঝাড়-ফুক করে বাসায় পানি ছিটায়। অনুমান ১১:২৩ ঘটিকায় বাসার বাহিরে যায় অতঃপর পুনরায় ১১:৩৪ ঘটিকায় ভিকটিমের বাসায় ফিরে দেখে ভিকটিম তাহমিনা বেগম ফাতেমা তার রুমে শুয়ে আছেন। আসামি মোঃ মোবারক হোসেন সরাসরি ভিকটিম সুমাইয়া আফরিন বিনথি এর রুমে গিয়ে ভিকটিম সুমাইয়া আফরিন রিনথিকে ধর্ষণের চেষ্টাকালে মা তাহমিনা বেগম ফাতেমা দেখে ফেলেন এবং তিনি আসামিকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে প্রথমে আসামি মোঃ মোবারক হোসেন ও তাহমিনা বেগম ফাতেমা এর মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরবর্তীতে আসামি মোবারক হোসেন ভিকটিম তাহমিনা বেগম ফাতেমা-কে তার রুমে নিয়ে গিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেন। অতঃপর ভিকটিম সুমাইয়া আফরিন রিনথি এর রুমে প্রবেশ করে আবার ভিকটিম সুমাইয়া আফরিন বিনয়ি-কে ধর্ষণের চেষ্টাকালে ভিকটিম সুমাইয়া প্রতিরোধ করতে গেলে তাকে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর আসামি মোবারক ভিকটিমের বাড়িতে থাকা ০৪ (চারটি) মোবাইল ও ০১ (একটি) ল্যাপটপ চুরি চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়।
অসামির কাছে থেকে চোরাইকৃত ০৪ (চারটি) মোবাইল ও ০১ (একটি) ল্যাপটপ, মোবাইল ও ল্যাপটপের চার্জার উদ্ধার করে। এছাড়া আদামী ভিকটিমের বাসায় কমলা রংয়ের যে ব্যাগটি নিয়ে প্রবেশ করে তা আসামির বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আসামি গ্রেফতার এড়ানোর জন্য বিভিন্ন স্থান ও তার অবস্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে ছিল। তবে তথ্য প্রযুক্তি, পুলিশের কৌশল, পেশাদারিত্ব ও অপরাধ দমনে দৃঢ় সংকল্পের কারণে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামি মোঃ মোবারক হোসেনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় কুমিল্লা জেলা পুলিশ।
এফপি/রাজ