দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে সরকারি রাস্তার পাশে গাছ কেটে নেওয়ার মহোৎসব চলছে প্রকাশ্য দিবালোকে। কোনো অনুমতি বা প্রশাসনিক নির্দেশনা ছাড়াই এভাবে গাছ কাটা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) উপজেলার ১নং বুলাকীপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের দামোদরপুর সৌলা এলাকায় প্রায় ২০ বছরের পুরোনো প্রায় ৬০টি ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মিলন মিয়ার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত মিলন মিয়া উপজেলার ১নং বুলাকীপুর ইউনিয়নের চকবয়রা গ্রামের সাহেব মিয়ার ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাছগুলো কেটে ভ্যানে তোলা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, এ কাজের নেতৃত্বে আছেন মেম্বার মিলন মিয়া।
তাকে ফোনে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আমি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গাছগুলো কাটছি।”
তবে ১নং বুলাকীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সদের আলী খন্দকার এ বিষয়ে অবগত নন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “আমি কিছুই জানি না। এ বিষয়ে কোনো অনুমতিও দিইনি।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনের আলোয় গাছ কাটলেও উপজেলা প্রশাসন বা বন বিভাগ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। স্থানীয় এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “এই গাছগুলো শুধু রাস্তার সৌন্দর্য বাড়ায়নি, ঝড়-ঝাপটায় আমাদের সুরক্ষাও দিত। এখন কোনো কাগজপত্র ছাড়াই কাঠের বোঝা ভ্যানে তোলা হচ্ছে—এটা গাছ কাটার নামে চুরি ছাড়া কিছু নয়।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। মেম্বারকে গাছ না কাটতে নির্দেশ করেছি।
কিন্তু সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গাছ কাটা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে পুনরায় অবহিত করলে ইউএনও সংক্ষেপে সাংবাদিকে বলেন, “আপনার যা করণীয় আছে তা করেন”।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি রাস্তার গাছ কাটতে হলে প্রশাসনের অনুমতি আবশ্যক। কোনো ব্যক্তি বা জনপ্রতিনিধির পক্ষে এভাবে গাছ কাটা সম্পূর্ণ বেআইনি, যা বন আইন ও সড়ক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।
এলাকাবাসীর দাবি, মসজিদে কাজ করার নামে গাছ কাটার নাটক সাজিয়ে ব্যক্তিস্বার্থে গাছ বিক্রির ষড়যন্ত্র চলছে। তারা অবিলম্বে গাছ কাটা বন্ধ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং গাছ বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের নাম প্রকাশের দাবি করেছেন।
এফপি/রাজ