বরগুনার বেতাগীতে মাছ ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলামকে (৫৫) অপহরণ করে নির্যাতনের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও অভিযুক্তরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। ফলে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন ভুক্তভোগী শহীদুল ও তার পরিবার।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের কাইয়ালঘাটা গ্রামের শহীদুল ইসলাম পেশায় একজন মাছ ব্যবসায়ী। দীর্ঘদিনের পরিচয়ের সুবাদে হোসনাবাদ ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের আসাদুজ্জামান জীবন শহীদুলের কাছ থেকে কয়েকবার মাছ কেনাবেচা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ মে শহীদুলকে কৌশলে ডেকে নিয়ে গাছের সাথে হাত-পা বেঁধে রেখে মারধর ও নির্যাতন চালানো হয়। এ সময় তার শরীরে জ্বলন্ত সিগারেট চেপে ধরা হয় এবং ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
পরে শহীদুলের ফোন থেকে তার স্ত্রী নিপু বেগমকে ফোন করে জানানো হয়, ৫ লাখ টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে। নিপু আতঙ্কে আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে ৩ লাখ টাকা সংগ্রহ করে চিহ্নিত স্থানে পৌঁছে দিলে সেখান থেকে টাকা সংগ্রহ করে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়। ওই দিন রাত ৮টার দিকে স্থানীয় চারার স্কুলের সামনে চোখ বাঁধা অবস্থায় শহীদুলকে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
ঘটনার পর ২০ মে শহীদুলের বোন রোকেয়া বেগম বেতাগী থানায় একটি অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। এতে আসাদুজ্জামান জীবন ও আলমগীর হাওলাদারকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, আসামিরা মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ প্রকাশে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সাংবাদিক পরিচয়ে ফোন দিলে আসাদুজ্জামান জীবন ফোন কেটে দেন এবং কিছুক্ষণ পর হুমকিস্বরূপ ফোন কল আসে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বেতাগী থানার এসআই মিজানুর রহমান বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। বিকাশ ও নগদ লেনদেনের তথ্য সংগ্রহে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভুক্তভোগী শহীদুল ইসলাম বলেন, এভাবে একজন নিরপরাধ ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, তা মানবতাবিরোধী। আমি জীবনের নিরাপত্তা ও ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করছি।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয়রা।
এফপি/রাজ