চট্টগ্রামের কদমতলী চৌরাস্তার মোড়ে রেলওয়ের স্টাফ কোয়ার্টারের সীমানা ঘেঁষা জমিতে ঈদের ছুটির সময় পাকা দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে রেল বিভাগের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ অনুযায়ী, রেলের স্থাপত্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সরাসরি তদারকিতে ছয়টি দোকান নির্মাণ করেন এবং ইতিমধ্যেই দোকানগুলো ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও রেলওয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সরকারি জমিতে নির্মিত এসব দোকানের জন্য কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এমনকি রেলওয়ের নিজস্ব বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করে গোপনে কাজ শেষ করা হয়েছে, যা সরকারি সম্পদের সরাসরি অপব্যবহার বলে অভিযোগ উঠেছে।
নির্মাণকালে ছুটির সময় এলাকায় জনসমাগম কম থাকায় বিষয়টি সবার নজরে আসেনি। তবে দোকান চালু হওয়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, দোকান নির্মাণে রেলওয়ের কোনো প্রকৌশল নকশা অনুসরণ করা হয়নি এবং প্রকল্পের কোনো দাপ্তরিক কাগজপত্রও রেকর্ডে নেই।
রেলওয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এ ধরনের স্থাপনা নির্মাণে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও সদর দপ্তরের অনুমোদন বাধ্যতামূলক। এখানে কোনো অনুমোদনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। এমনকি ব্যবহৃত বিদ্যুৎ ও উপকরণও সরকারি সম্পদ।”
এ ঘটনায় রেলওয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, “আমরাও অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কোনো কর্মকর্তা জড়িত থাকেন, বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তবে স্থানীয়রা বলছেন, রেলের জমিতে এ ধরনের অনিয়ম নতুন নয়। এর আগেও একাধিকবার এভাবে স্থাপনা নির্মাণের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তারা আশঙ্কা করছেন, এবারও হয়তো ‘তদন্তের আশ্বাস’ দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হবে।
নগর উন্নয়ন বিশ্লেষকদের মতে, “রাষ্ট্রীয় জমি রক্ষা করা সরকারি প্রতিষ্ঠানের অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু যখন সেই প্রতিষ্ঠানের ভেতর থেকেই অনিয়ম হয়, তখন তা ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়ে।”
রেলের এই জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ ও তা ভাড়া দেওয়ার ঘটনাটি রেলওয়ের অভ্যন্তরীণ জবাবদিহি ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাকেই স্পষ্ট করে তুলেছে। এখন দেখার বিষয়, সত্যিই কি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, নাকি ‘চেনাজানা’র জালে পড়ে ঘটনাটি অতীতের মতোই আড়ালে থেকে যাবে।
এফপি/রাজ