কেশবপুর উপজেলা সরকারি ৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
চিকিৎসকের ৩১টি পদের বিপরীতে এখানে কর্মরত আছেন ৮ জন। কেশবপুর উপজেলায় মোট জনসংখ্যা ২ লাখ ৯১ হাজার। এর বিপরীতে এই হাসপাতালে মঞ্জুরিকৃত ডাক্তারের পদ রয়েছে ৩১ জনের। হাসপাতাল ও এর মধ্যে সার্বক্ষণিক কর্মরত আছেন মাত্র ৮ জন ডাক্তার।
এছাড়া শিশু বিশেষজ্ঞ সপ্তাহে একদিন এবং গাইনি চিকিৎসক তিনদিন এখানে রোগী দেখেন। অন্যদিকে ৩৫ জন নার্সের মধ্যে ৩৫ জনই কর্মরত আছেন। অপরদিকে এখানে দীর্ঘদিন জুনিয়র চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় চক্ষুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলাবাসী।
কেশবপুর হাসপাতালে ২৩ জন ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে। ভর্তি রোগীদের স্বজনরা জানান, এছাড়া এ হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী ডাক্তার না থাকায় রোগীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। আগত রোগীরা কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে কর্মরত অধিকাংশ ডাক্তার নামেমাত্র হাজিরা দিয়ে তারা বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখার কাজে ব্যস্ত থাকেন।
এ হাসপাতালে আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মধ্যকুল গ্রামের কোমাদ সরদার, সাবাজ সরদার ও সাগরদাঁড়ি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রায় দুই ঘণ্টা হাসপাতালে এসে বসে থেকেও তারা ডাক্তার দেখাতে না পেরে ফিরে আসেন। এছাড়া হাসপাতালে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন না থাকায় এনালগ মেশিন দিয়ে রোগীদের এক্সরে করা হয়। পদ শূন্য ২৩ জন ডাক্তারের মধ্যে, আরএমও ১ জন, অর্থপেডিক, কার্ডিওলজিস্ট ১ জন, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ১ জন, চর্ম ও যৌন ১ জন, সার্জারি ১ জন, এনেসথেসিয়া ১ জন, ইএমও ১ জন, মেডিকেল অফিসার ১ জন ও সহকারী সার্জন ৬ জন।
এদিকে গত ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে গত আটমাস কেশবপুর হাসপাতালে। এআরভি ভ্যাকসিন সরবরবহ না থাকায় কুকুর ও বিড়ালে কামড়ানো আক্রান্ত ব্যক্তিরা ভ্যাকসিন না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে।
হাসপাতালে কর্মরত একজন চিকিৎসক আমার দেশকে জানান গত আট মাসে ১৩১২ জন ব্যক্তি কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আক্তান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। ওই সময়ে সরকারিভাবে ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে মাত্র ২০ ভায়াল। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। একডোজ ভ্যাকসিনের (ভায়াল) মূল্য প্রায় ৫৫০ টাকা। স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য যা কষ্টের। হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে আসা রোগীদের বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
কেশবপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এই হাসপাতালে ৩১ জন ডাক্তারের চাহিদা থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৮ জন। এই জনবল নিয়ে ৩ লাখ মানুষের সেবা দিতে হচ্ছে। এতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তাররা। তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী লোকবল পাওয়া গেলে, রোগীদের সেব্য দিতে অসুবিধা হবে না।
এফপি/রাজ