আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। গত ৪ নভেম্বর (২০২৪) কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তারপর থেকেই বিএনপির পদবঞ্চিত নেতারা নবগঠিত আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে একের পর এক কর্মসূচি পালন করে আসছে।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া রেনইউক বাঁধে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। একই সময়ে পদ বঞ্চিত নেতারা শহরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালন করে।
এদিকে সকাল থেকেই কর্মী সম্মেলনে যোগ দিতে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা দলে দলে সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হতে থাকে। সম্মেলনে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক কুতুবউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ সোহরাব উদ্দিন, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার, অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ কে বাবু বিশ্বাস।
কর্মী সম্মেলন শেষে জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বর্তমান শহর বিএনপির সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহমেদ বর্তমান শহর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
একই দিনে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কুষ্টিয়ায় পদ বঞ্চিত বিএনপির নেতারা একই সময়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালনসহ বর্তমান কমিটি বাতিল করে দুঃসময়ে দলের ত্যাগী ও নির্যাতিতদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করার দাবি জানান।
কমিটি বাতিলের দাবিতে আগামী ১২ জানুয়ারি ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও অনশন এবং ১৬ জানুয়ারি কুষ্টিয়ায় অনশন ও বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে পদবঞ্চিত নেতারা। তারা বলেন একের পর এক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে, যতদিন বর্তমান কমিটি বাতিল না হবে। এই কমিটি বাতিল না হলে সামনে আরো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন পদবঞ্চিত নেতারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জেলা বিএনপি, কাজল মাজমাদার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জেলা বিএনপি, শামিমুল হাসান অপু সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জেলা বিএনপিসহ জেলা বিএনপির পদবঞ্চিতরা।
একই সময় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি থাকায় শহরজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে সাধারণ বিএনপি কর্মীরা জানান, দীর্ঘ অপেক্ষার পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারীর পতন হয়েছে। এই সময়ে দলের গ্রুপিংয়ের কারণে সামনে আগানো কঠিন হয়ে পড়বে। এখন বিভক্তি দূর করে দল গোছানোর সময়। এই সময় দল গুছিয়ে সবাই একত্রে দলের জন্য কাজ না করতে পারলে সামনে কঠিন সময় পার করতে হবে বলে মনে করেন তারা।
এফপি/এমআই