চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া পিস্তল পাঁচ হাত ঘুরে পৌঁছে দুই জামায়াত কর্মীর হাতে। ৩ মার্চ সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে ওই দু’জন নিহত হওয়ার পর পিস্তলটি উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে লোহাগাড়া থানার লুট হওয়া আরেকটি পিস্তল গত বৃহস্পতিবার পতেঙ্গা থেকে উদ্ধার করা হয়। এ দুই অস্ত্র ছিল একই চক্রের কাছে।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থানা থেকে অস্ত্র লুটের চক্রে রয়েছেন অস্ত্র কারবারি ফরহাদসহ তিনজন। অস্ত্র বিক্রিতে সহযোগিতা করেন পুলিশ কনস্টেবল রিয়াদসহ দু’জন। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দিতে এসব কথা জানান তিন আসামি। অস্ত্র লুট ও বিক্রিতে জড়িত তিনজন হলেন– মোস্তাফিজুর রহমান শুরুজ, আবু বক্কর ও কনস্টেবল রিয়াদ। আদালতে হাজির করা আরেক আসামি ইসহাক চৌধুরী জবানবন্দি দেননি। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালত দুই আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
জবানবন্দিতে তিন আসামি জানান, কোতোয়ালি ও লোহাগাড়া থানা থেকে লুট করা হয়েছে তিনটি অস্ত্র। এগুলো রেখেছিলেন লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার একজন। তার কাছ থেকে সেগুলো সাতকানিয়ার দক্ষিণ রূপকানিয়ার মো. ইসহাকের কাছে যায়। ইসহাক পিস্তল বিক্রির জন্য সাতকানিয়া পৌরসভার ঢেমশা এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান শুরুজ ও সাতকানিয়া পৌরসভার সমাদারপাড়ার আবু বক্করের সঙ্গে পরামর্শ করেন। এই দু’জন অস্ত্রের ক্রেতা খুঁজতে থাকেন। আবু বক্করের নিকটাত্মীয় পুলিশ কনস্টেবল রিয়াদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়। রিয়াদ দুই জামায়াত কর্মীর কাছে (সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে নিহত নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক) একটি পিস্তল বিক্রির ব্যবস্থা করেন। আরেকটি পিস্তল অস্ত্র কারবারি ইসহাক, মোস্তাফিজুর ও বক্কর মিলে চট্টগ্রাম নগরের কাঠগড় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আবদুল গনির কাছে বিক্রি করেন। গনির কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি পিস্তল। এটি লোহাগাড়া থানা থেকে লুট হয়েছিল।
পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হওয়া তিনটি পিস্তল অস্ত্র কারবারিদের কাছে ছিল। এর মধ্যে দুটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তিন আসামি জবানবন্দি দিয়েছে। দুই আসামিকে রিমান্ডে এনে আরেকটি অস্ত্রের তথ্য পেতে চেষ্টা চলছে। থানা থেকে কারা, কীভাবে পিস্তল লুট করল, তা এখনও বের করা সম্ভব হয়নি। তবে লোহাগাড়ার চুনতির ‘বা’ আদ্যাক্ষরের এক আসামি এ ঘটনার হোতা। তাকে ধরতে পারলে বিস্তারিত জানা যাবে।
থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র বিক্রির অভিযোগে কনস্টেবল রিয়াদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এফপি/এমআই