শরীয়তপুরের জাজিরায় আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী কর্তৃক দুই চোখ উপড়ে ফেলা ও হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়ার নৃশংস ঘটনার শিকার অটোচালক রমজান মোল্লা এবং তাঁর স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর।
রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের অর্থায়নে বাস্তবায়িত মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবেরী রায় এর উদ্যোগে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে একটি মুদি দোকান — যাতে তাঁরা নতুন করে জীবিকা শুরু করতে পারেন।
এই সহায়তা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে প্রশাসনের “জনসেবায় পাশে” থাকার এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে জাজিরা উপজেলা প্রশাসন।
ঘটনাটি ঘটে গত ৬ সেপ্টেম্বর, উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের রুপবাবুরহাট এলাকায়। অটোচালক রমজান মোল্লাকে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী সুমন শিকদার ও তার সহযোগীরা ধরে নিয়ে গিয়ে অমানবিকভাবে নির্যাতন চালায়—উভয় চোখ উপড়ে ফেলে, হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়, এমনকি আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সুমন শিকদার দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা ও জুয়ার আসর চালিয়ে আসছিল। পুলিশি নজরদারি সত্ত্বেও সে প্রায়ই জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় মাদক ব্যবসায় লিপ্ত হত। সম্প্রতি নিজেকে রাজনৈতিক পরিচয়ে আড়াল করে আরও প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিল।
বিভীষিকাময় সেই ঘটনার পর থেকেই এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করে। তবে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় হামলাকারীদের একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
আহত রমজান মোল্লা বলেন, “আমি ভেবেছিলাম আমার জীবন শেষ। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন আমার পাশে দাঁড়িয়েছে— দোকান দিয়েছে, সাহস দিয়েছে। এখন আমার স্ত্রীকে নিয়ে নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করছি।”
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবেরী রায় বলেন, “মানুষের পাশে থাকা আমাদের দায়িত্ব। রমজান ও তার স্ত্রীকে জীবিকা ফিরিয়ে দিতে আমরা ছোট্ট একটি উদ্যোগ নিয়েছি, যাতে তাঁরা সমাজে মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেন।”
প্রশাসনের এই সহায়তা স্থানীয়দের মধ্যেও আশার আলো ছড়িয়েছে। তাঁরা বলেন, মাদক ও সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রশাসনের দৃঢ় অবস্থানই এখন এলাকার নিরাপত্তার ভরসা।
এফপি/এমআই