Dhaka, Saturday | 8 November 2025
         
English Edition
   
Epaper | Saturday | 8 November 2025 | English
কেমন থাকবে আজ ঢাকার আবহাওয়া
ক্যালেন্ডারে যোগ হচ্ছে নতুন সরকারি ছুটি
দেশব্যাপী ভয়ংকর রূপে ডেঙ্গু
এইচএসসির সোয়া ৪ লাখ খাতা পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ ১৬ নভেম্বর
শিরোনাম:

পপি সিড কী, এনিয়ে আইনে কী বলা আছে?

প্রকাশ: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:১৮ পিএম  (ভিজিটর : ৫)

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে পপি সিড বা পোস্ত দানার চালান আটকের পর থেকে অনলাইনে এই বীজটি নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল দেখা গেছে। পপি সিডই পোস্ত দানা কি না তাও জানার চেষ্টা করেছেন অনেকে।

সাধারণভাবে পোস্তদানা খাবারের মসলা হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাঙালি রন্ধন শৈলীতে কমবেশি প্রচলিত হলেও, মুঘল ঘরানার রান্নায় এর প্রচলন আর দশটা নিত্য উপাদানের মতো। 'ইউরোপিয়ান কুকারিতে'ও তার রমরমা উপস্থিতি।

তো সেই পোস্ত দানা তথা পপি সিড কেন আমদানি নিষিদ্ধ হবে, এমন জিজ্ঞাসাও রয়েছে। কেউ কেউ জানতে চান এটি খেলে কী হয়? 

পপি সিড বা পোস্ত দানার পরিচয় 

উদ্ভিদ হিসেবে পপি হাজার হাজার বছরের পুরনো। নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে কার্বন ডেটিং পদ্ধতিতে পশ্চিম ইউরোপে অন্তত ৫৯০০ বছর আগে পপির উপস্থিতির নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেছে। 

এদিকে, বাংলাপিডিয়া প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ ও ফসিলের কথা উল্লেখ করে বলছে, ৩০ হাজারেরও বেশি সময় ধরে এই উদ্ভিদটির সঙ্গে চেনাজানা ছিল নিয়ান্ডারথাল মানুষদের। 
মিশরীয় সভ্যতায় পপির অবস্থান মর্যাদাপূর্ণ ছিল - এমন ধারণা পাওয়া যায়, ফারাও তুতেনখামুনের মমির পোশাক ও অলংকারের বর্ণনা শুনলে। 

বিবিসি'র রেডিও ফোরের ন্যাচারাল হিস্ট্রিজ এর একটি পর্ব করা হয়েছিল এই উদ্ভিদটিকে নিয়ে। সেখানে উঠে আসে – তুতেনখামুনের পোশাক তৈরিতে পপি গাছ ব্যবহার করা হয়েছিল। তার সঙ্গে রাখা পোশাক ও আসবাবপত্রেও পপির অলংকরণ ছিল। খ্রিষ্টপূর্ব ১৩২৫ সালে সমাধিস্থ করা হয়েছিল তাকে। 

নানা প্রজাতির পপির মধ্যে প্যাপাভার সোমনিফেরাম প্রজাতিটাই পপি হিসেবে বেশি পরিচিতি পেয়েছে। কারণ, এই উদ্ভিদ থেকে তৈরি হয় অপিয়াম বা আফিম। যা স্থান, কাল ও সংস্কৃতিভেদে চিকিৎসার উপকরণ কিংবা শক্তিশালী মাদক হিসেবে ব্যবহার হয়ে এসেছে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে।

শুধু আফিমই নয়, আরো কয়েকটি ওষুধ মতান্তরে মাদকের উৎস এই পপি। এক্ষেত্রে নাম করতে হবে মরফিন, হেরোইন ও কোডিনের। এগুলোর উদ্ভব শক্তিশালী ব্যথানাশক ওষুধ হিসেবে যদিও মাদক ও চোরাচালানের বস্তু হিসেবে বেশি প্রচার পেয়েছে।

অবশ্য, আফিমসহ অন্য ওষুধগুলো তৈরি হয় পপির ফলের গায়ে আঁচড় কেটে সংগ্রহ করা রস থেকে। বীজের সঙ্গে এর সম্পৃক্ততা নেই। তবে, রস সংগ্রহের সময় বীজেও খানিকটা লেগে যাওয়া অসম্ভব নয়। 

চাষ বা আমদানি নিষিদ্ধ

বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ - এ মাদকদ্রব্যের তিনটি শ্রেণির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো ক, খ ও গ। ধারাক্রমই বলে দিচ্ছে সবচেয়ে গুরুতর মাদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে 'ক'-কে।

'ক' শ্রেণির মাদকদ্রব্যের শীর্ষে রাখা হয়েছে "অপিয়াম পপি গাছ, অপিয়াম পপি ফল কিংবা অপিয়াম পপির অঙ্কুরোদগম উপযোগী বীজ"। এটা স্পষ্ট যে, অঙ্কুরোদগম উপযোগী বীজ হলে তা থেকে পপি চাষ করা সম্ভব।

আইনের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধকরণ ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যায়ে বলা আছে, অ্যালকোহল ব্যতীত অন্যান্য মাদকদ্রব্য অথবা মাদকদ্রব্যে উৎপাদন অথবা প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত হয় এইরূপ কোনো দ্রব্য অথবা উদ্ভিদের চাষাবাদ, উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাতকরণ, বহন, পরিবহন বা স্থানান্তর; এবং আমদানি বা রপ্তানি করা যাইবে না।

মাদক আইনে নির্দিষ্টভাবে 'অঙ্কুরোদগম উপযোগী' বীজের কথা বলা হলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব ধরনের পপি সিড বা পোস্ত দানাকেই আমদানি নিয়ন্ত্রিত পণ্যের তালিকায় রেখেছে।

এ সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়েছে, মসল্লা অথবা অন্য কোনোভাবেও পোস্ত দানা আমদানি যোগ্য হইবে না।

মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় যাই থাকুক, বাংলাদেশে মসলার দোকান থেকে শুরু করে সাধারণ মুদি দোকানেও পোস্ত দানা পাওয়া যায়। দেশে উৎপাদন বা আমদানি নিষিদ্ধ হলে বাজারে আসে কীভাবে?

এ প্রশ্নের একটা জবাব হতে পারে, সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরে আটক হওয়া পণ্যের চালানটি। যদিও সেটি নিশ্চিত করে বলা কঠিন। 

চট্টগ্রাম বন্দরের ঘটনা

বৃহস্পতিবার পাকিস্তান থেকে পাখির খাদ্যের সঙ্গে আসা বিপুল পরিমাণ মাদক আটকের খবর বাংলাদেশে চাঞ্চল্য তৈরি করে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস জানায়, বন্দরে পাকিস্তান থেকে আসা দুটি কন্টেইনারে প্রায় ২৫ হাজার কেজি বা ২৫ টন পপি সিড আটক করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, আমদানি নথি অনুযায়ী গত ৯ অক্টোবর পাকিস্তান থেকে ৩২ হাজার ১০ কেজি পাখির খাদ্য আমদানি করা হয় চট্টগ্রামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আদিব ট্রেডিংয়ের নামে। 

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কন্টেইনার দুটির খালাস প্রক্রিয়া স্থগিত করে চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর শাখা। পরে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের উপস্থিতিতেই কন্টেইনার দুটি পরীক্ষা করা হয়।

কন্টেইনারের দরজার পাশে শুরুর দিকে সাত হাজার ২০০ কেজি পাখির খাবার রেখে এর পেছনে প্রায় ২৫ হাজার কেজি পপি সিড ঢেকে রেখে কৌশলে আমদানি করা হয়, বলছে কাস্টমস্।

আমদানিকৃত এই পণ্যের বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা বলেও জানানো হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ এই পণ্য যারা বাংলাদেশে এনেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছিল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। 

এফপি/অ

সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝