Dhaka, Monday | 28 April 2025
         
English Edition
   
Epaper | Monday | 28 April 2025 | English
রোমান্টিক ওয়েদারে প্রিয়জনকে যেভাবে সময় দিবেন
কাশ্মীরিদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ভারতীয় সেনারা
আসিফ নজরুলের বাসভবনে ড্রোন, নিরাপত্তা জোরদার
ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে পাঠাগার থেকে শত শত বই লুট
শিরোনাম:

কোটি-কোটি টাকা বিদেশে পাচার

স্মার্টফোন ভাড়া নিয়ে জুয়ায় বিনিয়োগ, অ্যাকাউন্ট খুলতে গড়ে উঠেছে সিন্ডিকেট

প্রকাশ: রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮:১৯ পিএম  (ভিজিটর : ২০২)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নে পুলিশ প্রসাশনের এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) কার্যক্রম না থাকায় অনলাইন জুয়ার কালো থাবায় কোটি-কোটি টাকা পাচার হচ্ছে বিদেশে। মোবাইলে জুয়ার এ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া খেলতে গিয়ে অনেকেই সর্বশান্ত ও ঋনগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।

এলাকায় প্রশাসনের নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সম্প্রতি এই অনলাইন জুয়া খেলার প্রবনতা ও কালো থাবা দিনদিন বেড়েই চলেছে। শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী সবার হাতেই স্মার্ট ফোন। বাড়ি, হাটে, মাঠে-ঘাটে মোবাইলফোনের স্ক্রিন স্ক্রল করতে দেখা যায় তাদের। কেউ গেমিংয়ে ব্যস্ত, কেউ অনলাইন জুয়ায়। যাদের নিজস্ব স্মার্টফোন নেই, তারাও জড়িয়ে পড়ছেন অনলাইন জুয়ায়। সেক্ষেত্রে স্মার্টফোন ভাড়া নিয়ে জুয়ায় বিনিয়োগ করছেন তারা।

এক্ষেত্রে জুয়াড়িদের অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে ও ডলার সরবরাহ করতে গড়ে উঠেছে এজেন্ট সিন্ডিকেট। রয়েছে মাস্টার এজেন্ট ও সাব এজেন্ট। এসব এজেন্টের কাছ থেকে বাংলাদেশি মুদ্রার বিনিময়ে ডলার সংগ্রহ করেন জুয়াড়িরা।

সহজে প্রচুর টাকা উপার্জনের লোভে পড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও তরুণেরা অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন; বাদ যাচ্ছে না নারীরাও। জুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে সর্বস্ব হারাতে বসেছেন অনেকে। এ কারণে বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি ও দাম্পত্য কলহ।

এই অনলাইন জুয়ার কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটিপতি বনে যাচ্ছেন এজেন্টরা। কারণ তারা ডলার সরবরাহের বিনিময়ে কমিশন পেয়ে থাকেন। পুঁজি হারানোর কোনো ভয় নেই তাদের। বিপরীতে স্বল্প সময়ে লাখপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর মানুষ একের পর এক বিনিয়োগ করে সর্বস্ব খুইয়ে রাস্তায় বসছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অনলাইন জুয়াড়ি জানান, স্মার্টফোনে নির্ধারিত কয়েকটি অ্যাপস ডাউনলোড করে অংশ নেওয়া যায় এই জুয়ায়। এর মধ্যে ‘বাবু ৮৮’ ও ‘ওয়ানএক্সবেট’ উল্লেখযোগ্য। বাবু ৮৮ অল্প টাকায় খেলা যায়। এর লেনদেন হয় বিকাশের মাধ্যমে। আর ‘ওয়ানএক্সবেট’- এ রয়েছে ছয় শতাধিক জুয়ার গেম। এতে বিপুল টাকা বিনিয়োগ ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজন হয় এবং নির্দিষ্ট এজেন্টের মাধ্যমে করতে হয় লেনদেন। এসব জুয়ার গেমের বেশিরভাগই পরিচালিত হচ্ছে রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে। বাংলাদেশে এগুলোর স্থানীয় প্রতিনিধি (এজেন্ট) রয়েছে। মাস্টার এজেন্টরা বিদেশি অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছ থেকে হাজারে কমপক্ষে ৬০ টাকা কমিশন পান। এতে তারা রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন। আলিশান বাড়ি ও গাড়ির মালিক হয়ে  যাচ্ছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সাব এজেন্ট জানান, আমরা মূল এজেন্টের হয়ে কাজ করি। আমাদের মাসিক বেতন দিয়ে থাকে। এখন ছাত্র, যুবক ও মধ্যবয়সীরা অনলাইন জুয়ায় বেশি ঝুঁকে পড়েছে। আমরা আজ পর্যন্ত কোনো খেলোয়াড়কে লাভ করতে দেখিনি। প্রথমে দুই একটা গেমে জেতে, এতে লোভ বেড়ে যায়। পরে সব খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে।

অনলাইন জুয়া খেলার বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমে জানা যায়, এই জুয়াড়ীদের রয়েছে একটি গোপন সিন্ডিকেট। তারা অনলাইনের এই জুয়াড়ীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য গোপনে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে অনেকেই লক্ষ লক্ষ টাকা পেয়েছে এই অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে। এতে অনেকে লোভে পড়ে ও কৌতুহলী হয়ে নিজের মোবাইলে জুয়া এ্যাপস ডাউন লোড করে সেখানে বিকাশ বা নগদ হিসাবে টাকা তুলে নেমে পড়ছে গেম খেলতে। এভাবে গেম খেলতে খেলতে এক পর্যায়ে সে নিঃস্ব হয়ে পড়লেও বিষয়টি সে গোপন রাখে এবং বলে বেড়ায় সে এভাবে জুয়া খেলে অনেক টাকা জিতেছে। যাতে এই লাইনে আরো সদস্য বৃদ্ধি পায়। এই অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ব্যক্তিরা অধিকাংশই মাদকাশক্ত। তারা দিন রাত চব্বিশ ঘন্টাই এই অনলাইন জুয়া নিয়ে পড়ে থাকেন।

অনুসন্ধানে নেমে আরও জানা যায়, এই অনলাইন জুয়াড়ীরা বিভিন্ন অনলাইন জুয়া অ্যাপস ব্যবহার করে অনলাইন ক্যাসিনো জুয়া খেলার মাধ্যমে সাধারন মানুষকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে খেলায় অংশ গ্রহন করায়। এভাবে একটি চক্র ও জুয়ার এজেন্টরা সাধারন মানুষকে খেলার আসক্তি করায়। পরে তারা ভুক্তভোগির মোবাইল ব্যাংকিং নগদ/বিকাশ/রকেট প্রভৃতি মাধ্যম ব্যবহার করে ই-ট্রানজেকশন এবং নগদ লেনদেনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবে এক পর্যায়ে ওই ভুক্তভোগি লোকটি নিঃস্ব হয়ে পড়ে।

এলাকার সচেতন মহল ও স্থানীয়রা জানান, এই অনলাইন জুয়া আসক্তির ফলে পারিবারিক নানান অশান্তি, কোন্দল, ঝগড়া বিবাদ, দাম্পত্ত কলহ ও সংসার ভাঙ্গার ঘটনা বেড়েই চলেছে। সেই সাথে এই গেমে আসক্ত হয়ে এক পর্যায়ে নিঃস্ব হয়ে মাদকাশক্ত হয়ে পড়ছে অনেকেই। মানুষকে শারিরীক, মানসিক, অর্থনৈতিকসহ সবদিক থেকেই পঙ্গু করে মেরে ফেলার মত মানব বিধ্বংসী এই মোবাইল জুয়া ও মাদকাসক্তদের শুরুতেই কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোংলা থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়টি নিয়ে আমরাও তৎপর রয়েছি। কোথাও কোন ক্লু পেলে বা এর সাথে জড়িত থাকার কোন প্রমাণ পেলে সাথেসাথেই অভিযান পরিচালনা করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এফপি/এমআই
বিষয়:  মোংলা   অনলাইন জুয়া   স্মার্টফোন  
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝