জরুরি ও প্রয়োজনীয় ওষুধের সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে জয়পুরহাটের গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম ভরসাস্থল কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। ওষুধের নিয়মিত বরাদ্দ কমে যাওয়ায় এবং চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় গত ৬ মাস ধরে রোগীরা পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় ওষুধ। ফলে কমিউনিটি ক্লিনিকের ওপর নির্ভরশীল নিম্ন আয়ের মানুষদের খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।
এ সংকট শুধু কমিউনিটি ক্লিনিকেই নয়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতেও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী প্রত্যাশিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার মোহাম্মদাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম পারুলিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে এসে খালি হাতে ফিরেছেন বেলআমলা গ্রামের রাজুবালা, কেশবপুর আমিনা, পারুলিয়ার তোফাজ্জল। স্বাস্থ্যকর্মী জানান ‘আগে প্রাথমিক চিকিৎসার সব ওষুধ পাওয়া গেলেও এখন বরাদ্দ কম।’
এলাকাবাসী বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষ টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে না পেরে বিনা চিকিৎসায় ভুগছি।’
ক্ষেতলাল উপজেলার ইকরগাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে আসা রোগী শাজাহান আলী বলেন, ‘সর্দি, জ্বরের পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের ওষুধ পাওয়া যেত, এখন কিছুই নেই।’
এই ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী মাহবুবা খাতুন জানান, ‘স্বল্প পরিমাণে ওষুধ এলেও তা কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। পুরো মাসজুড়ে রোগীদের ওষুধ দিতে পারছি না, তাই রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।’
ওষুধ সরবরাহ না থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যকর্মীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আল মামুন বলেন, ‘জয়পুরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলায় ১১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে গত মার্চ মাস থেকে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে এসব ক্লিনিকের কর্মীরা শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। রোগীদের মাঝে এতে করে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, তবে আমরা আশা করছি, দ্রুত সমাধান হবে।’
পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘জেলায় ২৫টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও ১টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ। এরপরও প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখা হচ্ছে যাতে রোগীরা চিকিৎসা নিতে পারেন। ওষুধ না থাকলেও স্বাস্থ্যকর্মীরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।’
এফপি/রাজ