মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ঈদের ছুটিতে গ্রামে বেড়াতে এসে পুকুরে সাঁতার শেখানোর সময় পানিতে ডুবে মারা গেছেন বাবা ও তার মেয়ে।
সোমবার (৯ জুন) বিকেলে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামে।
নিহতরা হলেন- বাবুল আহমেদ বাবু (৬০), স্থানীয় ‘বাবুল ব্রিকস’-এর মালিক, এবং তার মেয়ে হালিমা মোহাম্মদ (১৮), যিনি রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
স্থানীয় সূত্র ও পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, বাবুল আহমেদ বাবু পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করছিলেন। ঈদ উপলক্ষে তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসেন। সোমবার বিকেলে মেয়েকে সাঁতার শেখাতে নিজ বাড়ির পুকুরে নামেন তিনি। একপর্যায়ে হালিমা পানিতে তলিয়ে গেলে বাবু দ্রুত মেয়েকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেন। কিন্তু তিনিও পানির গভীরে আটকে যান।
পরিবারের লোকজন ও আশপাশের লোকজন খবর পেয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। পরে দুজনকে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া জানান, “হাসপাতাল থেকে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এটি একটি দুর্ঘটনা, কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।”
এদিকে এই ঘটনায় হামিদপুর গ্রামসহ পুরো জুড়ী উপজেলাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাবুল একজন দানশীল ও অমায়িক মানুষ ছিলেন। মেয়েও লেখাপড়ায় ভীষণ মনোযোগী ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে পরিবার ও অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়া জরুরি। সাঁতার শেখানোর সময় নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার এবং আশপাশে প্রশিক্ষিত কাউকে রাখার পরামর্শ দেন তাঁরা।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও স্পষ্ট হলো, পানিতে অসাবধানতাই বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে—আর এতে প্রাণহানির মতো অপূরণীয় ক্ষতি ঘটে যেতে পারে এক নিমেষেই।
এফপি/রাজ