Dhaka, Friday | 6 June 2025
         
English Edition
   
Epaper | Friday | 6 June 2025 | English
ঘরের মাঠে অভিষেকে হামজার গোল
দাড়িপাল্লা প্রতীক ফেরত পাচ্ছে জামায়াত ইসলামী: নির্বাচন কমিশন
ঈদ উৎসবে জমজমাট ওয়ালটন ফ্রিজের বিক্রি
এখন থেকে ভুল সংবাদ পরিবেশন করলে ব্যবস্থা: আজাদ মজুমদার
শিরোনাম:

বঙ্গবন্ধুসহ চার শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল

প্রকাশ: বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫, ১২:০৪ এএম  (ভিজিটর : ২৫২)

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনের সংশোধিত খসড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক রাজনীতিবিদের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ স্বীকৃতি বাতিল করে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে ।

সংশোধিত আইনে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘যারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন, তারাই বীর মুক্তিযোদ্ধা’।

নতুন আইনে নিম্নলিখিত চার শ্রেণির ব্যক্তিদের ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে:

যেসব বাংলাদেশি পেশাজীবী বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ অবদান রেখেছেন এবং বিশ্ব জনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।

মুজিবনগর সরকারের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারী বা দূতসহ অন্যান্য সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সব শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে দায়িত্ব পালনকারী সব বাংলাদেশি সাংবাদিক।

স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা।

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ইতিহাসবিদ ও ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আইন বদলে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান পরিবর্তন করা যায় না। এটি অপ্রয়োজনীয় এবং অপচয়মূলক উদ্যোগ’।

মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি জনযুদ্ধ, কেবল সামরিক যুদ্ধ নয়। এ লড়াইয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ঢালাওভাবে এমএনএ, এমপিএ ও গণপরিষদ সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিল করা পুনর্বিবেচনা করা উচিত’।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিদের স্বীকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, যা ইতিহাসকে বিকৃত করার শামিল। মুক্তিযুদ্ধ একটি পরিকল্পিত সংগ্রাম ছিল, যেখানে রাজনীতিবিদরাই মূল নেতৃত্ব দিয়েছেন’।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘যারা সরাসরি যুদ্ধ করেছেন, তারাই মুক্তিযোদ্ধা থাকবেন। রাজনীতিবিদরা সরাসরি যুদ্ধ করেননি, তাই তাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিল করে নতুন পরিচয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে কোনো মর্যাদা কমানো হয়নি, বরং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে আরও সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে’।

এই পরিবর্তনের ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত প্রায় ১০ হাজার ব্যক্তির পরিচয় বদলাতে হবে। যারা এতদিন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে আসছিলেন, তাদের নতুনভাবে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হবে ।

এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও জাতীয় পরিচয়ের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এটি মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দিক নিয়ে নতুন করে আলোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হতে পারে।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝