জয়ের জন্য মাঠে লড়ছে দুই পক্ষের দল আর মাঠের বাইরে বাজিতে জিততে মরিয়া তৃতীয় পক্ষ বাজির জুয়াড়ি দল। আইপিএল (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ) খেলা হচ্ছে ভারতে আর বাজির খেলায় মেতেছে বাঞ্ছারামপুরের কৃষক, দিনমজুর, রিক্সা চালক, ছাত্র, তরুণসহ বিভিন্ন পেশার ব্যবসায়ীরা।
মাদকের মত আইপিএল জুয়ার ছোবল এখন উপজেলার সর্বত্র। এ খেলায় বাজি ধরে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অনেকে। সৃষ্টি হচ্ছে পারিবারিক অশান্তি। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় সচেতন মহল।
উপজেলার হাট-বাজার থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান, বাসা-বাড়ি এমন কি যেখানেই টিভি সেখানেই চলছে বাজি খেলা। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই দলের খেলোয়াড়দের কোয়ালিটির উপর ভিত্তি করে ফেলা হয় দলের বাজি দর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজির এ দর নিয়ন্ত্রণ করে উপজেলার কয়েকটি এজেন্ট। আবার ওই এজেন্টদেরকে নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী চক্র। আর এ চক্র দিনের পর দিন চালিয়ে যাচ্ছে এই রমরমা ব্যবসা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খেলার ফলাফলের ওপর হচ্ছে দুই পক্ষের জুয়ারিদের বাজি। এরপর ম্যাচ শুরুর পর থেকেই পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান, মুদির দোকানসহ যেখানেই সুযোগ হয় সেখানেই চলছে বাজির জুয়া খেলা। প্রতি ম্যাচে ১০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে লাখ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরা হচ্ছে। এছাড়াও প্রতি খেলোয়াড়, প্রতি ওভার, প্রতি বল হিসাবেও বাজি ধরা হচ্ছে।
সপ্তাহ জুড়ে রাতে খেলা শুরু হওয়ার পর সরেজমিনে উপজেলা সদরসহ, ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম্য বাজার ও এলাকার ছোট-বড় চায়ের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি দোকানেই টিভির সামনে চলছে রমরমা জুয়ার বাজি। ফলে ক্রিকেট জুয়ার ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে বৃদ্ধ, মধ্য বয়সী, তরুণ, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ যুবসমাজ।
উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় খেলা উপভোগ করতে আসা কয়েজন দর্শকের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা সারাদিন পরিশ্রম করে বাড়ি ফিরে এলাকার চায়ের দোকানে চা-সিগারেট খেতে এসে একটু টিভি দেখি। এখন আইপিএল খেলা চলছে তাই খেলা দেখার পাশাপাশি জুয়ারিদের জয়-পরাজয়ে তাদের অনুভূতি উপভোগ করি।
বাজির জুয়া সম্পর্কে তারা বলেন, ম্যাচ শুরুতে টসে কোন দল জিতবে? তা থেকে শুরু করে প্রথম ব্যাটিং কত রান করবে, ম্যাচের জয়-পরাজয়, এক ওভারে কত রান হবে, এক বলে কী হবে, ডট বল হবে কি-না, কোন খেলোয়াড় কেমন খেলবে এমন সব কিছুর ওপরই চলে বাজির জুয়া। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর টিভির পর্দার সামনে খেলার দর্শকদের মধ্যে যে ভিড় দেখা যায়, এর প্রায় প্রতিটিই ছোটখাটো জুয়ার আসর। ছোট খাটো চায়ের দোকানে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১,০০০ টাকা পর্যন্ত বাজির খেলা হয়।
চলতি আইপিএল নিয়ে বাজির বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জুয়াড়ি বলেন, এখন আইপিএল টুর্নামেন্টের মাঝামাঝি সময় চলছে। ৮/৯ টি করে ম্যাচ গেছে। প্রথম ম্যাচ থেকে এখন পর্যন্ত বাজি খেলে অনেকের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। ঘরে বসেইে এজেন্টের কাছে ফোনের মাধ্যমে কথা বলে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা বাজি ধরা যায়।
এফপি/রাজ