১৯৬১ সালের ১৮ আগস্ট দেশের কৃষি শিক্ষা, গবেষণা ও কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং দক্ষ কৃষিবিদ তৈরির উদ্দেশ্যে ময়মনসিংহের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা প্রায় সাড়ে ১২শ একর ভূমির উপর বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই উৎপাদনশীল ফসলের বীজ উদ্ভাবন, মাছ ও প্রাণীর জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কার, উন্নত সংকর জাতের প্রাণী উদ্ভাবন এবং পরিবেশবান্ধব বালাইনাশক তৈরিসহ নানাভাবে দেশের কৃষিখাতে অবদান রেখে চলেছে।
প্রতিষ্ঠার হওয়ার পর এই বিশ্ববিদ্যালয় অতিক্রম করেছে ৬৪ বছরের পথচলা। আনন্দ র্যালি, ব্রহ্মপুত্র নদ ও ঈশা খাঁ লেকে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ এবং ফলদ ও বনজ গাছের চারা রোপণসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ৬৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপিত হয়েছে।
দিবসটি উদযাপনে নানা আয়োজনের শুরুতে সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলিপ্যাডে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া দিবসটির উদ্বোধন করেন।
এরপর কবুতর অবমুক্তি ও বেলুন উড়ানোর মাধ্যমে আনন্দ র্যালির উদ্বোধন করা হয়। র্যালিটি হেলিপ্যাড থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে দিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেন সড়ক হয়ে পূর্বের স্থানে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদ ও ঈশা খাঁ হল-সংলগ্ন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। এছাড়া আবাসিক হলগুলোতে বৃক্ষরোপণের জন্য হল প্রাধ্যক্ষদের হাতে চারা গাছ তুলে দেওয়া হয়।
এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে “বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবের ৬৪ বছর: অর্জন ও সম্ভাবনা” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা স্ব স্ব অনুষদের গবেষণা, অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
বাকৃবি দিবস উদযাপনের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জি. এম. মুজিবুর রহমান সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো বাহানুর রহমান, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটির সদস্য-সচিব ও কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. হেলাল উদ্দীন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড হুমায়ুন কবির, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঁঞা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীমসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
দিবসটি উদযাপনের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জি. এম. মুজিবুর রহমান বলেন, 'নানা ঐতিহাসিক অর্জনের সাক্ষী হয়ে বাকৃবি আজ ৬৫ বছরে পদার্পণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন এবং কৃষিখাতের উন্নয়নের জন্য উপাচার্য যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন আমরা তা মেনে চলব।'
অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, '১৯৬১ সালের ১৮ আগস্ট ২টি অনুষদ নিয়ে বাকৃবির যাত্রা শুরু হয়। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, দক্ষ কৃষিবিদ তৈরি, নতুন ফসল ও সংকর প্রাণী উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন গবেষণা ও কার্যক্রমের মাধ্যমে আজ বাকৃবি বিশ্বে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান করে নিয়েছে। এই অবস্থানে আনতে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।'
এফপি/এমআই