শিরোনাম: |
নোয়াখালীর হাতিয়ায় চুরির দায়ে জাহেদ নামে এক যুবককে সালিশে বৈঠকের কথা বলে ডেকে নিয়ে আটকে রাখেন বিএনপি নেতা সোহেল মাহমুদ। সকালে গাছের সাথে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ তাকে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে উপজেলা চানন্দী ইউনিয়নের প্রকল্প বাজার এলাকা থেকে ওই যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত জাহেদ হোসেন উপজেলার চানন্দি ইউনিয়নের প্রকল্প বাজার এলাকার মো. জাকেরের ছেলে। অভিযুক্ত সোহেল মাহমুদ হাতিয়া উপজেলার ২নং চানন্দি ইউনিয়ন পশ্চিম শাখা বিএনপির সাবেক সভাপতি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জাহেদ কয়েকদিন আগে বিএনপি নেতা সোহেল মাহমুদের বাড়ীতে মাসিক বেতনের ভিত্তিতে দিনমজুরের কাজ যোগ দেয়। ২-৩ দিন কাজ করে সে কাউকে না জানিয়ে সেখান থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসে। এ সময় সোহেল মাহমুদের ঘরের আলমারির চাবি, মোবাইল ও অন্যান্য জিনিস পত্র জাহেদ চুরি করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করা করা হয়।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার আলি বাজার এলাকা থেকে জাহেদকে ধরে মোটরসাইকেলে করে প্রকল্প বাজার এলাকায় নিয়ে যায় সোহেল মাহমুদ। সেখানে সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এ সময় সেখানে তার বাবাকেও ডাকা হয় এবং চুরির বিষয়টি জানানো হয়। একপর্যায়ে তার বাবাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হলেও জাহেদকে প্রকল্প বাজারে আটকে রেখে হুমকি-ধামকি ও নির্যাতন করা হয়। আজ সকালে প্রকল্প বাজারের প্রধান সড়কের পাশে একটি গাছে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জাহেদের বাবা মো. জাকেরের অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলেকে চুরির দায়ে আটক করে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। ছেলে যদি অপরাধ করে থাকতো তাকে আমি বিচার করতে পারতাম। তারা আমার ছেলেকে কেন আমার হাতে ছেড়ে দেয়নি? কেন আটকে রেখেছে? আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
এই ঘটনায় বিএনপি নেতা সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘কয়েকদিন আগে ছেলেটা আমাদের বাড়িতে থেকে কাজ করতো। সে আমাদের ঘর থেকে চাবি, মোবাইল চার্জারসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি করে নিয়ে যায়। গতকাল সন্ধ্যায় তাকে হাতিয়া আলি বাজার এলাকায় দেখা গেলে সেখান থেকে তাকে প্রকল্প বাজার তার বাড়ির সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার বাবাকে ডেকে তার সামনেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর বেশি আমি কিছু জানি না। আজ সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে তার মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারি।’
হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বলেন, বিষয়টি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলে আশা করছি।
এফপি/অআ