কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ গিনি অ্যাঞ্জেলফিশ বা আফ্রিকান অ্যাঞ্জেলফিশ (Holacanthus africanus)। রঙিন ও দৃষ্টিনন্দন এই মাছ সাধারণত উষ্ণমণ্ডলীয় প্রবাল প্রাচীর এলাকায় পাওয়া যায়।
সোমবার স্থানীয় জেলে আ. জলিল মাঝির ট্রলারে মাছটি ধরা পড়ে। ওইদিন সকালে আলীপুর মৎস্য বন্দরে নিয়ে আসা হলে তা দেখতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা। অনেকেই বলেন, মাছটি দেখতে অবিকল অ্যাকুরিয়ামের মাছের মতো।
প্রায় ১৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এই মাছটির গায়ে গাঢ় সোনালি রঙের ওপর হলুদ দাগ এবং মুখে সোনালি-হলুদ মাস্ক আকৃতির প্যাটার্ন রয়েছে।
স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী জামাল বলেন, এমন মাছ জীবনে দেখিনি। অবিকল অ্যাকুরিয়ামের মাছের মতো। বাসায় সবাইকে দেখানোর জন্য ছবি তুলেছি।
ব্যবসায়ী সেলিম জানান, প্রথমে মাছটি বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। তবে খাওয়া যায় কি না জানি না।
আলীপুরের আরেক ব্যবসায়ী কামাল বেপারি বলেন, এ জাতীয় মাছ সাধারণত প্রবালপ্রধান লবণাক্ত সমুদ্রে বাস করে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে সচরাচর ধরা পড়ে না, কারণ এখানে প্রবাল প্রাচীর নেই। তবে আন্দামান সাগর সংলগ্ন মিয়ানমারের কিছু এলাকায় প্রবাল রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও সাগরের স্রোতের তারতম্যের কারণে এসব মাছ নতুন এলাকায় দেখা দিতে পারে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, বাংলাদেশে এ মাছ গিনি অ্যাঞ্জেলফিশ নামে পরিচিত। এটি গভীর সমুদ্রের বিরল প্রজাতি। সচরাচর উপকূলে পাওয়া যায় না। তবে এমন মাছ ধরা পড়া জেলেদের জন্য সুখবর। এ ধরনের মাছের আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা থাকায় অর্থনৈতিকভাবে জেলেরা লাভবান হবেন।
শেকৃবির গবেষক মীর মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, গিনি অ্যাঞ্জেলফিশ মূলত আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের গভীর সমুদ্রের মাছ। সচরাচর বঙ্গোপসাগরে এ প্রজাতি পাওয়া যায় না। জলবায়ু পরিবর্তন, সাগরের পানির উষ্ণতা বৃদ্ধি ও স্রোতের পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের মাছ এখন নতুন এলাকায় দেখা দিচ্ছে। এটি সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি নতুন ইঙ্গিত।
এফপি/রাজ