বিএনপি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) নীতিমালা রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে নীতিমালা পরিবর্তন করা হবে। বিগত আওয়ামী লীগ বা বর্তমান সরকারের যেসব নীতিমালা মুক্তবাজার অর্থনীতির পরিপন্থি, সেগুলো আমরা অবশ্যই রিভিউ করব।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর বনানীর হোটেল সারিনায় সেন্টার ফর টেকনোলোজি জার্নালিজম (সিটিজে) আয়োজিত ‘এনইআইআর : বাস্তবায়ন কাঠামো, জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক উদ্বেগ’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে আমীর খসরু এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, যে পণ্য সবার দরকার, সেটার দাম বেশি হতে হবে কেন? ৬৭ হাজার কোটি টাকা ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগ করেছে, তার ফল কী? উৎপাদনের নামে স্থানীয়ভাবে যারা মোবাইল ফোন অ্যাসেম্বেল করে সুযোগ নিচ্ছে, তারা কতটুকু ভ্যালু এড করছে? যারা ইনভেস্টমেন্ট করে ব্যবসা করছে, তারা প্রতি বছর ভ্যালু এডিশন করছে কিনা, সেগুলো দেখতে হবে। দুই পক্ষের ট্যাক্সের পরিমাণ সামঞ্জস্য আছে কিনা, সেটা দেখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো পলিসি সুনির্দিষ্ট সিন্ডিকেটের জন্য তৈরি করা হলে সেই ব্যবসা দাঁড়াতে পারে না। এভাবে মনোপলি ব্যবসার সুযোগ দিলে তারা সব ব্যবসায়ীকে নিয়ন্ত্রণ করবে। তারা অ্যাসেম্বেলিংয়ের নামে এমনিতেই ৫০ শতাংশ সুযোগ বেশি নিচ্ছে, সেখানে অন্য ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ করে একক নিয়ন্ত্রণ নিলে এর ফলাফল ভালো হবে না।
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, যে কোনো নীতিমালা করার ক্ষেত্রে সেটাতে রাষ্ট্র ও জনগণের লাভ হচ্ছে কিনা, সেটা সবার আগে বিবেচনা করতে হবে। সেই নীতিমালা সামগ্রিক স্বার্থে নাকি সুনির্দিষ্ট সিন্ডিকেটকে সুযোগ দেওয়ার জন্য করা হচ্ছে, সেটা দেখতে হবে। কারও পকেট ভারি করার জন্য নীতিমালা করা যাবে না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশে যেখানে কর্মসংস্থান নেই, সেখানে এনইআইআর নীতিমালা করে যারা কর্মসংস্থান করেছে, তাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা না করে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতি না মেনে একতরফা সিদ্ধান্ত আগের স্বৈরচারী সরকারকেও হার মানাচ্ছে। শেখ হাসিনার মতো পলিসি করা বিপজ্জনক এবং অত্যন্ত দুঃখজনক। অভ্যুত্থানের সামনে দাঁড়িয়ে এই সরকারেরও শেখ হাসিনার মতো একতরফা নীতি মেনে নেওয়া যায় না। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার সুযোগ দিয়েই পলিসি তৈরি করতে হবে।
গোলটেবিল বৈঠকে কী-নোট পেপার উপস্থাপন করেন সিটিজের সভাপতি ও দৈনিক সমকালের সহকারী সম্পাদক হাসান জাকির। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টারের (বাক্কো) সেক্রেটারি ফয়সল আলিম, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম, বেসিসের সহায়ক কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান রাফায়েল কবীর, দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. সায়েম ফারুকী, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন নয়ন, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মোবাইল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আরিফুর রহমান প্রমুখ।
এফপি/জেএস