বার্সেলোনা শিবিরে এখন স্বস্তি আর আনন্দ—তার বড় কারণ লামিন ইয়ামাল। বিশ্বের অন্যতম সেরা উঠতি ফুটবলারকে দলে পাওয়ার সুখ তো আছেই, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তার দলের প্রয়োজনে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার মানসিকতা। মাঠে লামিনের আত্মত্যাগ, রক্ষণে বাড়তি শ্রম এবং পেশাদারিত্বে মুগ্ধ কোচ হানসি ফ্লিক থেকে শুরু করে ড্রেসিংরুম—সবাই।
দলের প্রয়োজনে খেলোয়াড়দের নতুন ভূমিকায় মানিয়ে নেওয়াতে বরাবরই দক্ষ ফ্লিক। চলতি মৌসুমে এরিক গার্সিয়াকে কখনো ডিফেন্সিভ মিডফিল্ড, কখনো ফুলব্যাকে ব্যবহার করেছেন। জেরার্ড মার্টিন খেলেছেন বাম দিকের সেন্টার-ব্যাক হিসেবে, আবার ফেরান তোরেসকে দেখা গেছে ফলস নাইনে। তবে বেতিসের বিপক্ষে ম্যাচে সবচেয়ে চোখে পড়া চমক ছিল—লামিন ইয়ামালকে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে নামানো।
অবাক করার বিষয়, এই পজিশনটি অনুশীলনেও কখনো ট্রাই করা হয়নি। ম্যাচের আগে লামিনের সঙ্গে কথা বলেন ফ্লিক। প্রস্তাবটা রাখতেই তরুণ তারকা রাজি হয়ে যান। ম্যাচ শেষে তাতেই উচ্ছ্বসিত কোচ বলেন,“আমি ওর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। জিজ্ঞেস করেছিলাম ১০ নম্বর পজিশনে খেলতে চায় কি না। ও হ্যাঁ বলেছে, আর আমি খুব খুশি।”
ফ্লিকের ভাষায়, ওই ম্যাচে লামিনের পারফরম্যান্স ছিল প্রশংসনীয়। আক্রমণের সঙ্গে রক্ষণেও দায়িত্ব পালন করেছেন তরুণ উইঙ্গার। বল ছাড়াই দৌড়েছেন, নিচে নেমে সাহায্য করেছেন ডিফেন্সকে।
কয়েক সপ্তাহ আগেও অবশ্য ফ্লিক অভিযোগ তুলেছিলেন, দলের কিছু আক্রমণভাগের খেলোয়াড় প্রেসিং ও রক্ষণে পর্যাপ্ত শ্রম দিচ্ছেন না—সেই তালিকায় ছিলেন ইয়ামালও। তবে সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোতে নিজেকে আমূল বদলে দিয়েছেন তিনি। আক্রমণের ঝলক কমিয়ে দলের প্রয়োজনে কঠোর পরিশ্রমের পথ বেছে নিয়েছেন।
অ্যাথলেটিকোর বিপক্ষে ম্যাচে বল পুনরুদ্ধারে সবার ওপরে ছিলেন লামিনে—৯ বার। ওই ম্যাচের পর ফ্লিক বলেন,“প্রেসিংয়ে ও অসাধারণ। রক্ষণে অনেক উন্নতি করেছে, আবার আক্রমণেও কার্যকর ভূমিকা রাখছে।”
বেতিসের বিপক্ষে ম্যাচে আক্রমণভাগে একাধিক খেলোয়াড় বিশ্রামে থাকায় লামিনের ওপর বাড়তি দায়িত্ব পড়েছিল। সেই চাপ সামলাতেও পিছপা হননি তিনি। পেনাল্টি থেকে একটি গোলের পাশাপাশি ৪৪টি পাস দিয়েছেন, যার মধ্যে ভুল মাত্র তিনটি। বল স্পর্শ করেছেন ৮৫ বার, ব্লক করেছেন দুটি শট, বল পুনরুদ্ধার করেছেন তিনবার।
সব মিলিয়ে, বার্সার ভবিষ্যৎ তারকাকে নিয়ে এখন স্বপ্ন দেখছে ক্লাব। প্রতিভার পাশাপাশি দায়িত্ববোধে পরিণত হয়ে উঠছেন লামিন ইয়ামাল—এটাই বার্সার জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
এফপি/জেএস