রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার তেনাপচা গ্রামে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পরিবহন বিভাগের কনস্টেবল (বিএ-১৭৭৯৮) শাজাহান মোল্লার বিরুদ্ধে প্রবাসীর জমি দখল, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে অবৈধ নির্মাণ, মসজিদ নির্মাণে বাধা এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী পরিবার প্রতিকার চেয়ে গত ২৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মহাখালি ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার তদন্ত করছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী আলেয়া বেগম, শরিফা বেগম ও বর্ণা বেগম জানান, তাদের স্বামীরা দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে প্রবাসী। এই সুযোগে প্রতিবেশী কনস্টেবল শাজাহান মোল্লা তাদের মালিকানাধীন জমিতে টয়লেটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেন এবং জমির গাছপালা কেটে ফেলেন।
গত মার্চ মাসে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করলে তারা পুলিশের সহায়তায় কাজ বন্ধ করেন এবং গোয়ালন্দ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। এসিল্যান্ড বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নির্মাণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও শাজাহান মোল্লা সরকারি ছুটির সময় ফের অবৈধভাবে নির্মাণ শুরু করেন বলে অভিযোগ।
এরপর আর্মি ক্যাম্প ও থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে কাজ বন্ধ হয়। ঘটনাস্থলে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদুর রহমান উপস্থিত হয়ে জমির সীমানা নির্ধারণ ও পিলার স্থাপনের নির্দেশ দেন।
কিন্তু পরবর্তীতে কনস্টেবল শাজাহান ও তার পরিবারের সদস্যরা সেই পিলার তুলে ফেলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্হানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউএনও মীমাংসার স্বার্থে শাজাহান মোল্লাকে নকশা অনুযায়ী প্রাপ্ত জমি থেকে অতিরিক্ত তিন ফুট জমি দেন এবং পিলার থেকে প্রায় আট ফুট দূরে মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু করার নির্দেশ দেন। কিন্তু এরপরও কনস্টেবল শাজাহানের পরিবারের বাধায় মসজিদের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে মসজিদের কাজ বন্ধ থাকায় নির্মাণসামগ্রী খোলা আকাশের নিচে নষ্ট হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় শিক্ষক নুরুল ইসলাম ও মামুন হোসেন। তারা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান, প্রায় এক বছর আগে বৃষ্টির মধ্যে শাজাহান মোল্লা ও তার পরিবারের সদস্যরা পুরোনো পিলার তুলে বাদীপক্ষের জমির ভেতরে পুনরায় স্থাপন করেন।
অভিযুক্ত কনস্টেবল শাজাহান মোল্লা মুঠোফোনে বলেন, “আমার জমির সঠিক মাপ আমি এখনো বুঝে পাইনি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার চাকরি ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।”
ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের কাছে শাজাহান মোল্লার অবৈধ কার্যক্রমের ছবি, ভিডিও ফুটেজ ও কল রেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে।
তারা গোয়ালন্দ ঘাট থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন—নম্বর ৮৫৯ ও ৭০৪।
এফপি/অআ