| শিরোনাম: |

ইলিশ মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা জারির চারদিন অতিবাহিত হওয়ার পর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে দায়সারা ধরনের একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে দৌলতদিয়া সাত নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় একটি সামিয়ানা টানিয়ে এবং সমতলে কয়েকটি চেয়ার বসিয়ে আয়োজন করা হয় এ মতবিনিময় সভা। অনুষ্ঠানে অল্প কিছু মৎস্যজীবী উপস্থিত থাকলেও অধিকাংশ জেলে ছিলেন অনুপস্থিত। জানা যায়, একদিনের নোটিশে তড়িঘড়ি করে এই সভার আয়োজন করা হয়।
এ বছর মৎস্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনার কথা ছিল— যেমন (ক) গুরুত্বপূর্ণ মাছঘাট, আড়ৎ ও বাজারে মাইকিং; (খ) জেলেপল্লী, আড়ৎ, বাজার ও ল্যান্ডিং সেন্টারে পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ; (গ) সভা-সমাবেশের আয়োজন; (ঘ) জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি ও বিজ্ঞাপন প্রকাশ; (ঙ) প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার-প্রচারণা; এবং (চ) সংশ্লিষ্ট সমিতিসমূহকে অবহিতকরণ।
কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, এসব কার্যক্রমের বেশিরভাগই অনুপস্থিত। শুধু কয়েকটি ব্যানার টানানো ছাড়া কোনো দৃশ্যমান প্রচারণা ছিল না। স্থানীয় সাংবাদিকদেরও আগাম জানানো হয়নি।
দৌলতদিয়া সাত নম্বর ফেরিঘাট এলাকার আজিবর হোসেন বলেন, “প্রতিবছর ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালানো হয় এবং বড় বড় সাইনবোর্ড টানানো হয়। কিন্তু এবার কিছুই হয়নি।”
নদী তীরবর্তী ছাত্তার মেম্বার পাড়ার সোহেল ব্যাপারী জানান, “এবার শুধু মাছ বাজারে একটা সাইনবোর্ড দেখেছি, আর আজকের সভা ও জাল পোড়ানো অনুষ্ঠান। জেলেরা শিক্ষিত নয়, আগে থেকে জানালে এত ক্ষতি হতো না। নামকাওয়াস্তে সভা করে অনেকই নাস্তা পর্যন্ত পায়নি।”
ফেরিঘাটের আড়তের কয়েকজন জেলে জানান, “প্রতিবছর আমাদের নিয়ে একাধিক সভা-সমাবেশ হয়। কিন্তু এবার শুধু গতকাল বিকেলে সামান্য মাইকিং হয়েছে। অথচ এসব কাজের জন্য সরকারি বাজেট বরাদ্দ আছে।” অভিযোগ রয়েছে, এর আগেও জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের কর্মসূচি ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা হয়নি— শুধুমাত্র একটি ব্যানারেই শেষ হয়েছে কার্যক্রম।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ আহরণ, মজুদ ও বিপণন নিষিদ্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার ব্যবস্থা নেবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও টাস্কফোর্স। এছাড়া, বেসরকারি সংস্থাগুলোকে অনুরোধ করা হবে— জেলেদের নেওয়া ঋণের কিস্তি আদায় এই সময়ে বন্ধ রাখতে।
গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম পাইলট বলেন, “আমরা এবছর অনেক দেরিতে চিঠি পেয়েছি। তখন দুর্গাপূজার ছুটি থাকায় সভা করা সম্ভব হয়নি। তাই এখন সভা করে জেলেদের বিষয়টি অবহিত করছি।”
এফপি/অআ