হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে পুর্ব বিরোধ ও গ্রামীণ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের নারী পুরুষসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙ্গচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানাগেছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল আনুমানিক আটটায় থেকে প্রায় নয়টা পর্যন্ত উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের দক্ষিণ আটপাড়া, জলসুখা হাটি, দক্ষিণ পাড়া, ইছবপুর, শঙ্খমহল এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, সাইকুল বেগম (৫০), জিয়া রহমান (৩৫), তকদির মিয়া (৪২), ইমন (২২), নাইম (২৪), সামিম (১৯), মছদ উল্লা (৬০), জয় (২০) মুসকুদ উল্লা (৫০) আলী নুর (১৪), ফয়সল (১৪)। বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুর্ব বিরোধ ও গ্রামীণ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ডাঃ রেজাউল করিম,বর্তমান ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন মিয়া, জহুর হোসেন গং ও ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমেদ খেলু, সাবেক ইউপি সদস্য লিবাছ মিয়া, রন্টি মিয়া গংদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো।
এর জেরে তাদের মধ্যে বিগত কয়েক মাসে বেশ কয়েকদফা সংঘর্ষ ও একে অপরকে মারধোরের ঘটনা ঘটে। বিগত দিন দশেক পূর্বে ডাঃ রেজাউল করিমের ভাই সাবেক পুলিশ সদস্য জনি মিয়া লিবাছ মিয়ার পক্ষের আজাদ মিয়ার পরিবারের একজনকে মারধর করেন। এরপর গত ৯ মে সকালে আজাদ মিয়ার লোকজন ডাঃ রেজাউল করিমকে রাস্তায় পেয়ে মারধর করে।
এরই জেরে সোমবার (১২) বিকালে ডাঃ রেজাউল করিমের পক্ষের তিনগুষ্টির প্রধান জহুর হোসেন মিয়ার লোকজন লিবাছ মিয়ার পক্ষের আজাদ মিয়ার স্ত্রীকে মারধর করেন।
এ নিয়ে মঙ্গলবার সকালে উভয়পক্ষের লোকজন একে অপরকে সংঘর্ষের আহবান করলে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের নারী পুরুষসহ অন্তত ৪০ জন আহত হন।
ডাঃ রেজাউল করিম জানান, কিছুদিন পূর্বে আমার উপর হামলার ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করি। সোমবার ওই মামলার পুলিশ আসামি ধরতে গ্রামে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের লোকজনকে মারধর করে। আজ সকালে আবারো কযেকজনকে তারা ধাওয়া করে। এর প্রতিবাদে গ্রামবাসীর একাংশ একত্রিত হয়ে তাদের প্রতিহত করে। আমি মামলা দাযের করার পর থেকেই তাদের হুমকিতে আত্মগোপনে আছি।
ফয়েজ আহমেদ খেলুর পক্ষের সাবেক ইউপি সদস্য লিবাছ মিয়া জানান,গতকালকে জহুর হোসেন এবং ডাঃ রেজাউলের ভাই জনিসহ তিন গুষ্টির লোকজন আমাদের পক্ষের আজাদ মিয়ার স্ত্রীকে রাস্তায় পেয়ে মারপিট করে। আজ সকালবেলাও তারা আমাদের লোকজনদের মারার জন্য ধাওয়া করে। আমরা আমাদের লোকজনকে নিষেধ করেছি কোন সংঘর্ষে না জড়ানোর জন্য তারপরও প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা করলে আমরা আত্মরক্ষার্থে প্রতিহত করি৷ তারা আমাদের বেশ কটি বাড়ি ঘরে হামলা করে ভাঙচুর করে।
আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এফপি/রাজ